নিজস্ব প্রতিবেদক : একদিন পরই বাংলা নববর্ষ। অন্যান্য বছরের মতো এবারের পহেলা বৈশাখ নিয়ে মাতামাতি কম। কারণ ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকা এখন অনেকটাই ফাঁকা। তবে এই অবস্থায়ও বাজারে বৈশাখের প্রভাবে ইলিশের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি ঈদকে কেন্দ্র করে বেড়ে যাওয়া মুরগিও বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে।
রাজধানীর বাজারগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদ ও নববর্ষ এই দুই উৎসব ঘিরে রাজধানীর বাজারগুলোতে ইলিশের চাহিদা ও দাম উভয়ই বেড়েছে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ইলিশের দাম বেড়েছে প্রায় কেজিতে একশ থেকে দেড়শ টাকা।
তবে বিক্রেতারা এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, বর্তমানে ইলিশ ধরা পড়ছে কম, তাই বাজারে এর সরবরাহ কমেছে, এ জন্য দাম বাড়তি। তারা বলছেন, ঈদের কারণে মাছ আসতে পারেনি। যাও এসেছে, সেগুলোর দাম চড়া।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল ও মিরপুরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি জাটকা বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায়। ৭০০ গ্রাম ইলিশ ১২০০-১৩০০ টাকা, আর ১০০০ হাজার টাকায় মিলছে ৫৫০-৬০০ গ্রাম ইলিশ। বাজারে জাটকা ও ১ কেজির কম ইলিশ বিক্রি হতে দেখা গেছে বেশি। বড় ইলিশ নেই বললেই চলে।
মিরপুরের কাঁচা বাজারের মাছ ব্যবসায়ী সিদ্দিক মিয়া রাইজিংবিডিকে বলেন, ঈদের কারণে বাজারে মানুষ নেই। নববর্ষে ইলিশের বিক্রি গত কয়েক বছর ধরেই কম হয়। তবে নববর্ষের কারণে ইলিশ দাম বেড়েছে বলা যাচ্ছে না। এখন মাছের মৌসুম না, মাছ ধরা হচ্ছে না বেশি। তাই সরবরাহের অভাবে ইলিশের দাম বেড়েছে।
এদিকে, সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫-১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে শাক-সবজির দাম। আর কেজিতে ২০-৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে মুরগির দাম। সবজি ও মুরগিও বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে।
চাঁদ রাতে ২৫০ টাকা দরে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হলেও ১ দিনের ব্যবধানে, কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে এর দাম। মুসলিম বাজারে এক বিক্রেতা বলেন, আজকে মুরগি আসে নাই, অল্প কয়েকটা মুরগি আছে। রেট ২৬০ টাকা, পরিচিতদের কাছে ২৫০ টাকায় ও বিক্রি করছি।
এ ছাড়া লাল লেয়ারের দাম বেড়েছে প্রায় ২০-৩০ টাকা। প্রতি কেজি লাল লেয়ার ৩৮০ টাকা, আর সোনালী মুরগি ৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংস ১১৫০-১২০০ টাকা ও প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়।
বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৫০-৬০ টাকা, করলা ৪০-৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৪০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, শসা ৩০-৪০ টাকা ও লতি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি পেঁপে ৩৫-৪০ টাকা, খিরাই ৩০-৪০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, টমেটো ৩৫-৪০ টাকা ও পটোল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা, প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, চিচিঙ্গা ৩৫ থেকে ৫০ টাকা, প্রতি কেজি আলু ৪০ টাকা। এ ছাড়া প্রতি পিস লাউয়ের জন্য ৪০-৫০ টাকা ও প্রতি হালি লেবুর জন্য গুণতে হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা।
দাম বেড়েছে কাঁচা মরিচেরও। পাইকারিতে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায় ও খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। এ ছাড়া বাজারে লালশাকের আঁটি ১৫ টাকা, পাটশাক ১৫ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা, কলমি ১৫ টাকা ও পালংশাক ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা আনিস বলেন, ঈদের কারণে সবজির ট্রাক আসেনি। ফলে আগের সবজি বিক্রি করতে হচ্ছে। তাই দাম বেড়েছে।
বাজারে দাম বেড়েছে আদা, রসুন ও পেঁয়াজের। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। আর কেজিতে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতি কেজি দেশি রসুন ১৫০ টাকায় ও আমদানিকৃত রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। আদা আগের বাড়তি দামেই ২০০ থেকে ২২০ টাকায় কেজি বিক্রি হচ্ছে।