আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য রাষ্ট্র হওয়ার জন্য ফিলিস্তিনিদের আবেদনের ওপর নিরাপত্তা পরিষদে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ভোট অনুষ্ঠিত হবে।নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় বিকেল ৩টার দিকে নিরাপত্তা পরিষদে এ ভোট হবে। খবর রয়টার্সের।
কূটনীতিকরা জানান, ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ খসড়া প্রস্তাবটি নিয়ে শুক্রবার ভোট অনুষ্ঠান করবে। এই প্রস্তাবে ১৯৩ সদস্যের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে যে, ‘ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে জাতিসংঘের সদস্য হিসাবে স্বীকার করে নেওয়া হোক।’
নিরাপত্তা পরিষদে খসড়া প্রস্তাবটি পাস হলে সেটি সুপারিশ আকারে যাবে সাধারণ পরিষদে। তারপর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এর পক্ষে অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন লাগবে।
তবে এ প্রস্তাব আটকে যেতে পারে নিরাপত্তা পরিষদেই। নিরাপত্তা পরিষদে এ প্রস্তাব পাস হতে এর পক্ষে অন্তত ৯টি ভোট প্রয়োজন। একই সঙ্গে এ প্রস্তাবে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া কিংবা চীনের কোনো ভেটো পড়া যাবে না।
কূটনীতিকরা বলছেন, ফিলিস্তিনকে পূর্ণ জাতিসংঘ সদস্য করার পক্ষ সমর্থন করতে পারে নিরাপত্তা পরিষদের ১৩ সদস্য। ফলে প্রস্তাবটি আটকানোর জন্য ইসরায়েলের মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিতে পারে।
ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্যপদ দিতে খসড়া প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছে আলজেরিয়া। দেশটি এ প্রস্তাবের ওপর গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ভোট অনুষ্ঠানের অনুরোধ জানিয়েছিল। তবে ওই একইসময়ে মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে অংশ নেবেন কয়েকটি দেশের মন্ত্রীরা।
ফিলিস্তিন বর্তমানে জাতিসংঘ সদস্য না হলেও ২০১২ সালে তারা জাতিসংঘে পর্যবেক্ষকের মর্যাদা পেয়েছে। জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ লাভের জন্য ফিলিস্তিন বছরের পর বছর চেষ্টা চালিয়ে আসছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ড. রিয়াদ মনসুর বলেছেন, ‘আমরা পূর্ণ সদস্য হতে চাইছি। এটা আমাদের স্বাভাবিক ও আইনগত অধিকার।’ ফিলিস্তিনিদের পক্ষে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৩৭টি ইতিমধ্যেই স্বীকৃতি দিয়েছে।
আরব গ্রুপ মঙ্গলবার বলেছে,‘আমরা নিরাপত্তা পরিষদের সকল সদস্যকে খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাই। অন্ততপক্ষে, নিরাপত্তা পরিষদ সদস্যদের এই জরুরি উদ্যোগে বাধা না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।’
তবে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হওয়া উচিত সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে সরাসরি আলোচনার মধ্য দিয়ে; জাতিসংঘের মাধ্যমে নয়।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বুধবার বলেছেন, ‘নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবনা পাস করেই যে আমরা দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পথে এগুনোর মতো একটি অবস্থানে পৌঁছতে পারব তেমন সম্ভাবনা দেখি না।’