কুমিল্লা প্রতিনিধি : কুমিল্লায় পারভেজ হত্যা মামলায় সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে আরও পাঁচ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে আসামিদের।
সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে কুমিল্লা অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক নাসরিন জাহান মামলার রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কুমিল্লা সদর উপজেলার কালিবাজার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সেকান্দর আলী, মো. শাহিন, মো. সাদ্দাম হোসেন, মো. সাইফুল ইসলাম, মফিজ ভান্ডারি, মো. কাউসার (পলাতক), মো. রিয়াজ প্রকাশ রিয়াদ (পলাতক), বিল্লাল (পলাতক), মো. কামাল হোসেন, আব্দুল কাদের, মো. ইব্রাহিম খলিল, আনোয়ার, মো. মেহেদী হাসান রুবেল এবং জয়নাল আবেদীন প্রকাশে ল্যাংড়া জয়নাল।
মামলার এজাহারে জানা যায়, ২০২০ সালে ১০ জুন বিকেলে পারভেজ বাড়ি থেকে বের হয়ে সৈয়দপুর উচ্চ বিদ্যালয় গেটের মনির হোসেনের দোকানের সামনে যান। সেখানে আসামিরা তাকে ঘেরাও করেন। সেসময় তৎকালীন কালিবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেকান্দর আলীর নির্দেশে পারভেজকে প্রথমে মোটরসাইকেলে উঠানোর চেষ্টা করেন আসামিরা। ব্যর্থ হলে তারা একটি মারুতি গাড়িতে করে পারভেজকে সৈয়দপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কমলাপুর বাজারে অবস্থিত কামালের ছ’মিলে নিয়ে যান। সেখানে মামলার আসামি কামাল ও মফিজ ভান্ডারীসহ অন্যান্যরা মিলে পারভেজকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতে থাকেন। কামালের বড় ভাই সেলিম (মৃত) চিৎকার করে আসামিদের ছ’মিল থেকে বের করে দেন। ছ’মিল থেকে ২০০ গজ পূর্ব দিকে মোকশদ আলীর কাঠের বাগানের ভেতরে নিয়ে সেকান্দর আলী চেয়ারম্যানের নির্দেশে আসামিরা পারভেজকে চাপাতি, রড ও হকিস্টিক দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে হত্যা করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. শরিফুল ইসলাম জানান, চাঞ্চল্যকর পারভেজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে এজাহারে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন। এই ঘটনায় চারজন আসামি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলায় ৩১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের পর আদালত ১৪ জন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। রায়ের সময় ১৪ জন আসামীর মধ্যে ১১ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তিন আসামি পলাতক।
এদিকে, রায়ে অসন্তুষ্ট প্রকাশ করে নিহত পারভেজের স্ত্রী হাসিনা বেগম বলেন, আসামি সবার ফাঁসি চেয়েছিলাম। আমার জামাইরে তারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমি ন্যায় বিচারের জন্য উচ্চ আদালতে যাবো।