বাগেরহাট প্রতিনিধি : ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সুন্দরবনের প্রাণী ও প্রকৃতির। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে কাজ শুরু করেছে বন বিভাগ। বনের বিভিন্ন স্থানে মিলছে বন্যপ্রাণীর মরদেহ। ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে বনের ক্ষত।
মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুর ৩ টা পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বনের বিভিন্ন স্থান থেকে ২৬টি হরিণের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ১৭টি হরিণ। এছাড়া, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন বিভাগের ২৫টি টহল ফাঁড়ি। লবণপানি ঢুকে নষ্ট হয়েছে কমপক্ষে ৮০টি মিষ্টিপানির পুকুর।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীরা জলোচ্ছ্বাসের সঙ্গে অভ্যস্ত। সাধারণত জলোচ্ছ্বাস হলে বন্যপ্রাণীরা উঁচু স্থান ও গাছে আশ্রয় নেয়। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বনের ভেতর অধিক উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। ফলে বনের উঁচু স্থান তলিয়ে যাওয়ায় প্রাণীরা আশ্রয় নিতে সমস্যায় পড়ে। অধিক জলোচ্ছ্বাসের কারণে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে না পেরে হরিণগুলোর মৃত্যু হয়েছে।
সুন্দরবন বিভাগের খুলনাঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ৩টা পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনের কটকা ও দুবলা এলাকাসহ বনের বিভিন্ন স্থান থেকে মোট ২৬টি মৃত হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত অবস্থায় আরও ১৭টি হরিণ উদ্ধার করে বনরক্ষীরা। হরিণের পাশাপাশি আরও বন্যপ্রাণী মারা যেতে পারে। সেসব মৃত প্রাণীর খোঁজে বনরক্ষীরা তৎপর রয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, বন বিভাগের টহল অফিসগুলোর টিনের চালা, জানালা-দরজা, সোলার প্যানেল, ওয়ারলেস সিস্টেম ও অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে ঝড়ে। পূর্ব বন বিভাগের কটকা অভয়ারণ্যের অফিস ঘাটের জেটি ও পুকুর বঙ্গোপসাগর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দুবলা, কটকা, কচিখালি, বগিসহ বিভিন্ন বন অফিসের ২৫টি টহল ফাঁড়ির রান্নাঘরসহ অবকাঠামোর টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে। সুন্দরবনের ৮০টি মিঠাপানির উৎস পুকুরে ৮-১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস লোনা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বনকর্মীদের পাশাপাশি প্রাণীরাও সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে।