জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : ব্যাংকিং খাতে নানা অনিয়মের কারণে দিন দিন বেড়ে চলছে খেলাপি ঋণ। চলতি বছরের মার্চ মাস শেষে দেশের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। যা বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ১১ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ১৬ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্যমতে, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩৬ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা। যা আগের তিন মাসের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি। গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক জানান, সুদ যুক্ত হওয়ার কারণেও খেলাপি ঋণ বেড়েছে। খেলাপি ঋণ কমাতে ব্যাংকগুলোতে তদারকি বাড়ানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মার্চে যে পরিমাণ খেলাপি ঋণ বেড়েছে এরমধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪ হাজার ২২১ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ৬৫ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা। এরমধ্যে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ মার্চে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা এবং অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। এ ছাড়া সরকারি খাতের বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসির (বিডিবিপি) খেলাপি ঋণ ৮৭৩ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে সরকারি ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের ২০ দশমিক ৯৯ শতাংশ খেলাপি ছিল, যা মার্চে বেড়ে হয়েছে ২৭ শতাংশ।
বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে মার্চে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এসব ব্যাংকে ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৭০ হাজার ৯৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ ডিসেম্বরে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ছিল ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ, যা মার্চে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ।
বিশেষায়িত দুটি ব্যাংকের মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের খেলাপি ঋণ গত ডিসেম্বর শেষে ছিল ৫ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা । যা মার্চে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।
বিদেশি ব্যাংকগুলোতেও খেলাপি ঋণ বেড়েছে। ডিসেম্বরে বিদেশি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ ছিল ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা। মার্চে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।