কয়েকদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ডেমোক্র্যাট দলের জো বাইডেন। তাকে ঘিরে উল্লাস করছেন সমর্থকরা। অপরদিকে নির্বাচনী ফলাফল মেনে নিতে পারছেন না ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা।
তবে এখনও বাইডেনের কাছে পরাজয় স্বীকার করে নিতে নারাজ প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। আইনি পথে নির্বাচনী ফলাফল চ্যালেঞ্জ করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। কিন্তু এসব নিয়ে মোটেও মাথা ঘামাচ্ছেন না নব-নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তিনি জানিয়েছেন, দলমত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতে চান।
এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরাজয় স্বীকার করে নেবার জন্য অপেক্ষা না করেই বিশ্ব নেতারা প্রেসিডেন্ট পদে সদ্য নির্বাচিত জো বাইডেনকে অভিনন্দন জানাতে শুরু করে দিয়েছেন।
জার্মান চান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল বলেছেন, তিনি জো বাইডেনের সাথে ভবিষ্যতে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করার জন্য আগ্রহের সাথে অপেক্ষা করছেন। তিনি বলেন, আমাদের সময়কার যে বিশাল চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে তা মোকাবিলায় আমেরিকা ও ইউরোপ তাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক অটুট রেখে কাজ করবে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এক টুইট বার্তায় বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, বর্তমানের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। আসুন একসাথে কাজ করি।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সাঞ্চেস বলেছেন, তিনি বাইডেন ও কমলা হ্যারিসের সাথে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করতে আগ্রহী এবং তিনি তাদের সৌভাগ্য কামনা করেছেন।
গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিটসোটাকিস বলেছেন বাইডেন তার দেশের প্রকৃত বন্ধু। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার হবে এ বিষয়ে নিশ্চিত আমি।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি অবশ্য এতটা উষ্ণতা প্রকাশ করেননি। তিনি আমেরিকান গণতন্ত্রকে ব্যঙ্গ করে বলেছেন, নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক, আমেরিকান প্রশাসনে রাজনৈতিক, নাগরিক ও নৈতিক সব পর্যায়ে নিশ্চিত স্খলন খুবই স্পষ্ট।
বাইডেন ও কমলা হ্যারিসকে অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করার পর একটি দীর্ঘ বিবৃতি প্রকাশ করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এতে তিনি বলেছেন, কানাডা ও আমেরিকার মধ্যে সম্পর্ক অন্যন্য- যা বিশ্বে ব্যতিক্রমী। দু’দেশের সরকার শান্তি ও ঐক্য প্রতিষ্ঠায়, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে এবং বিশ্বে জলবায়ু সমস্যা মোকাবিলায় এক সঙ্গে কাজ করবে।
নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর জাতির উদ্দেশে দেয়া প্রথম ভাষণে জো বাইডেন বলেন, এই দেশের মানুষ মুখ খুলেছে। তারা আমাদের পরিষ্কার বিজয় দিয়েছে, একটা বিশ্বাসযোগ্য বিজয়। ডেলাওয়ারের উইলমিংটনে অগণিত সমর্থকের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, আমি এমন এক প্রেসিডেন্ট হওয়ার শপথ করছি, যে বিভাজন নয়, ঐক্যবদ্ধ করবে।
এ কথার পরপরই ট্রাম্প সমর্থকদের উদ্দেশে নব্য প্রেসিডেন্ট বলেন, এবার একে অপরকে সুযোগ দেই। এখন কঠোর বাকবিতণ্ডা দূরে রাখার, উত্তেজনা কমানোর, আবারও একে অপরকে দেখার, একে অপরের কথা শোনার সময় এসেছে। এখন আমেরিকার সেরে ওঠার সময়।