শেয়ারবাজারের মন্দা কাটাতে একের পর এক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। যার ধারাবাহিকতায় এবার বৃহৎ মূলধনী কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা/পরিচালকদেরকে বিনিয়োগে আনতে যোগাযোগ শুরু করেছে।
বেশ কিছুদিন ধরে শেয়ারবাজারে মন্দা যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত কমছে মূল্যসূচক ও লেনদেনের পরিমাণ। এরইমধ্যে লেনদেন গত ১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে। এই পরিস্থিতি উত্তোরনে নানা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কমিশন।
কমিশন নানা তৎপরতার মধ্যে গত ৩০ মার্চ শেয়ারবাজারে তারল্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাজার মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে বিকালে বৈঠক করেন। এতে অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডস (এএএমসিএমএফ) এর সভাপতি ড. হাসান ইমাম, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান, ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও এবং ক্যাপিটাল মার্কেট স্টাবিলাইজেশন ফান্ডের (সিএমএসএফ) প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ২৯ মার্চ অতালিকাভুক্ত ২৬ বীমা কোম্পানিকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) জন্য ফাইল দাখিল ও ইক্যুইটির ২০% শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রন কর্তৃপক্ষকে (আইডিআরএ) চিঠি দিয়েছে কমিশন।
এছাড়া গত ২৩ মার্চ শেয়ারবাজারের উন্নয়নে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য ৬১টি ব্যাংককে বিদ্যমান সক্ষমতার মধ্য থেকে বিনিয়োগ করার জন্য চিঠি দিয়েছে বিএসইসি। যে ব্যাংকগুলোর ৪০-৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।
এতোসব পদক্ষেপের পরে এবার বড় মূলধনী কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা/পরিচালকদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে কমিশন। বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক কোম্পানিতে বিনিয়োগের উপযোগী সময় বিবেচনায় তাদেরকে বিনিয়োগে আহবান করা হচ্ছে। এতে করে তারা যেমন লাভবান হবেন, একইভাবে শেয়ারবাজারকে সাপোর্ট দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বিজনেস আওয়ারকে বলেন, বর্তমানে অনেক কোম্পানির শেয়ার দর বিনিয়োগযোগ্য অবস্থায় রয়েছে। যেগুলোতে বিনিয়োগ করে লাভবান হওয়া যাবে। এই পরিস্থিতিতে বড় মূলধনী কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা/পরিচালকদেরকে বিনিয়োগে আনার জন্য কমিশনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এতে করে বিনিয়োগে আসা উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা যেমন লাভবান হবেন, একইভাবে শেয়ারবাজারকে সাপোর্ট দেওয়া হবে।
কমিশনের এই চলমান পদক্ষেপের মধ্যে শেয়ারবাজারকে সাপোর্ট দিতে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ৪ পরিচালক ৯ লাখ শেয়ার ক্রয়ের ঘোষণা দিয়েছেন। কোম্পানিটির পরিচালক স্যামুয়েল এস চৌধুরী, তপন চৌধুরী, অঞ্জন চৌধুরী এবং মিসেস রতনা পাতরা ২ লাখ ২৫ হাজার করে শেয়ার ক্রয়ের ঘোষণা নিয়েছেন। যা আগামী ২৮ এপ্রিলের মধ্যে কেনা হবে। যার বর্তমান বাজার দর প্রায় ২০ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার (০৭ এপ্রিল) স্কয়ার ফার্মার পরিচালকদের শেয়ার ক্রয়ের ঘোষনার দিনে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দরে। যাতে করে ওইদিনের শুরুর ২১৮.৪০ টাকার শেয়ারটি দিন শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২১.৪০ টাকায়। অর্থাৎ শেয়ারটির দর বেড়েছে ৩ টাকা।