বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ঈদের আগে অন্তত কয়েক দিনের জন্য পুঁজিবাজার খুলে দিতে অর্থমন্ত্রীর কাছে জোর আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক রকিবুর রহমান। শুক্রবার (১৫ মে) তিনি এই দাবি জানিয়েছেন।
রকিবুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজার বন্ধ থাকার কারণে স্টক এক্সচেঞ্জ এবং সকল ব্রোকারেজ হাউজের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তাতে করে কোন বিনিয়োগকারী ব্রোকারেজ হাউজ থেকে টাকা তুলতে পারছে না, বিনিয়োগ করতে পারছে না এবং দৈনন্দিন জীবন জীবিকা চালানোর জন্য শেয়ার বিক্রিও করতে পারছে না। ব্যাংক ব্যবস্থা খোলা থাকতে পারলে, পুঁজিবাজার কেন বন্ধ থাকবে? যেখানে পুঁজিবাজারের কোন ব্রোকারেজ হাউজে বিনিয়োগকারীদের যেতে হয় না। সবকিছু টেলিফোন, মোবাইল অ্যাপস, এসএমএস এবং ইমেইলের মাধ্যমে পরিচালনা করা যায়।
তিনি বলেন, সবচেয়ে দুর্ভাগ্য হলো বিশ্বের সব পুঁজিবাজার খোলা থাকলেও শুধুমাত্র বাংলাদেশই তার ব্যতিক্রম। পৃথিবীর সকল দেশের অর্থনীতি এবং পুঁজিবাজার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু প্রত্যেকটি দেশ চেষ্টা করছে কিভাবে প্রণোদনা দিয়ে, বড় ধরনের আর্থিক সহায়তা দিয়ে, লিস্টেড কোম্পানিগুলোর কর্পোরেট ট্যাক্স কমিয়ে, মিউচুয়াল ফান্ড এবং বন্ড মার্কেটকে স্ট্রং করে পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল রাখা যায়। যাতে করে পুঁজিবাজারে বড় ধরনের দরপতন না হয় এবং বিনিয়োগকারীরা বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। আমাদের দেশেও পুঁজিবাজারে লিস্টেড কোম্পানিগুলোর শেয়ারের অস্বাভাবিক দরপতন যাতে না হয়, তার জন্য পুঁজিবাজারবান্ধব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দরপতন ঠেকানোর জন্য ঐতিহাসিক ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করা হয়েছে। যে সিদ্ধান্ত ব্যাপকভাবে প্রসংসনীয়।
ফ্লোর প্রাইসের অর্থ হল প্রত্যেকটি শেয়ারের লোয়ার সাইডে একটি লোয়ার প্রাইস নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ লোয়ার প্রাইস টাচ হওয়ার সাথে সাথে অটোমেটিক্যালি ওই কোম্পানির ট্রেড বন্ধ হয়ে যাবে। অতএব ব্যাপক দরপতনের কোন সুযোগই নেই। বর্তমান পরিস্থিতির জন্য এটি একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। অর্থমন্ত্রী অত্যন্ত যোগ্য এবং পুঁজিবাজার অভিজ্ঞ একজন ব্যক্তি। তাই কারো দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে অর্থমন্ত্রী পুঁজিবাজারের লেনদেন খুলে দিবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। এতে হয়তো লেনদেন কম হবে। কিন্তু তাতে যদি লক্ষ্য লক্ষ্য বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হাজারখানেক বিনিয়োগকারীও লাভবান হয়, এটাই হবে অর্থমন্ত্রীর সফলতা।
ডিএসইর এই পরিচালক বলেন, পুঁজিবাজার চালুর বিষয়ে অর্থমন্ত্রীকে সিদ্ধান্ত দিতে হবে এবং বাস্তবতার সাথে থাকতে হবে। আবেগ দ্বারা পরিচালিত হয়ে বিশ্ব পুঁজিবাজার থেকে যেনো আলাদা হয়ে না যাই। এছাড়া লক্ষ লক্ষ বিনিয়োগকারী যেনো পুঁজিবাজারের উপর আস্থা হারিয়ে না ফেলে, সেই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। অর্থমন্ত্রী সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করবেন না বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।