দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া বেশির ভাগ সিকিউরিটিজের দর গত সপ্তাহে অপরিবর্তিত রয়েছে। এ সময়ে মাত্র ২০ কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৭৫টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দর কমে তালিকায় শীর্ষে রয়েছে সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ৪৪ শতাংশের বেশি। স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে এ তথ্য জানা গিয়েছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহের শুরুতে সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারদর ছিল ৭৮০ টাকায়। সপ্তাহ শেষে শেয়ারটির দর কমে দাঁড়ায় ৪৩৪ টাকায়। সে হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ৩৪৬ টাকা বা ৪৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে কোম্পানিটির ৯১ হাজার ৮৬৯টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
সর্বশেষ ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে সোনালী আঁশের পর্ষদ। আলোচ্য হিসাব বছরে বড় এ স্টক লভ্যাংশ বিতরণের কারণ হিসেবে কোম্পানিটি জানিয়েছে, নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা অনুসারে তারা পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ স্টক লভ্যাংশ কোম্পানিটির সংরক্ষিত আয় থেকে ঘোষণা করা হয়েছে। লভ্যাংশ ঘোষণার পরও কোম্পানিটির সংরক্ষিত আয় ইতিবাচক থাকবে। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ৯২ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১ টাকা ১৩ পয়সা। এ বছরের ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২২৮ টাকা ৫৮ পয়সায়। আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ২২৫ টাকা ৬৫ পয়সায়। ঘোষিত লভ্যাংশ ও আলোচ্য হিসাব বছরের অন্যান্য এজেন্ডায় শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নিতে এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১১টায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে এজিএম আহ্বান করেছে কোম্পানিটি। এ-সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট ছিল গত ৭ ডিসেম্বর।
৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ। সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ১ টাকা ১৩ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৬২ পয়সা। ২০১৯-২০ হিসাব বছরেও শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি। এর আগে ২০১০-১১ হিসাব বছর থেকে প্রতি বছর ১০ শতাংশ হারে নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে সোনালী আঁশ। ২০০৯-১০ হিসাব বছরে কোম্পানিটি মোট ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর মধ্যে ১৫ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ ছিল।
১৯৮৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ২ কোটি ৭১ লাখ ২০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৫৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ২৭ লাখ ১২ হাজার। এর মধ্যে ৫০ দশমিক ৭৮ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে। এছাড়া ৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ শেয়ার প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও বাকি ৪৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে রয়েছে।
সর্বশেষ নিরীক্ষিত ইপিএস ও বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারটির মূল্য-আয় অনুপাত বা পিই রেশিও ৩৮৪ দশমিক শূন্য ৭। অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যা ১১০ দশমিক ৭১।